মেথি নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম : প্রিয় পাঠক বৃন্দ আপনারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন মেথি সম্পর্কে। অনেকেই জানেন না মেথি সম্পর্কে। আবার অনেকে জানেন না মাঠির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। মেথির যে কি পরিমানে পুষ্টিগুণ আছে এই সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন। আমরা চেষ্টা করি আমাদের ব্লগের মাধ্যমে আপনাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকি। আজ আমরা চেষ্টা করেছি আপনাদের মেথি সম্পর্কে ভিবিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে। আমাদের সমাজে
অনেকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগে থাকেন। যার এক বার এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় তিনি বুজেন গ্যাস্ট্রিক কত বড় সমস্যা। বিশেষ করে যাদের হজমের সমস্যা আছে এছাড়া গ্যাস, এবং পেটের ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য প্রাকৃতিক কোনো উপাদান খুঁজে থাকি। তাই আপনারা প্রাকৃতিক উপাদান হিসাবে মেথি ব্যবহার করতে পারেন। মেথিতে আলাদা কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়া নাই বরং মেথিতে আছে অনেক উপকার। আমরা আমাদের আজকের পোস্টে মেথি সম্পর্কে মেথির নানাবিদ উপকারিতা এবং গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিত আলোচনা করব।তাই আপনারা মেথির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ পোস্ট পড়তে পারেন।
মেথির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ও মেথি পরিচিতি
মেথি সম্পর্কে জানতে হলে মেথির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে হবে। মেথিতে কি কি পুষ্টিগুণ উপাদান বিদ্যমান আছে আর এই পুষ্টিগুণ কি কি উপকার করে শরীরে। মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার,ভিটামিনস,মিনারেলস ,অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য। এই সব পুষ্টি উপাদান শরীরের জন্য অনেক উপকারী।এই সব সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
Vitamin : মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন B6 ,ভিটামিন C,এছাড়া রয়েছে আরো কিছু গুরুত্তপূর্ণ উপাদান। যা শরীরে বিভিন্ন ভাবে উপকার করে।
fiver : মেথিতে রয়েছে অতি উচ্চমাত্রায় ফিভার উপাদান যা শরীরে পাচনতন্ত্রের সুস্থতা রাখতে সহায়তা করে।
Minerals : মেথির বীজের মধ্যে থাকে ক্যালসিয়াম, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, এবং জিঙ্ক।
Anti-inflammatory :এই অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি মানব শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
উপরোক্ত উপাদানগুলো শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আর এই উপাদান মেথিতে থাকে।গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে পারেন আশা করি উপকার হবে .
মেথি খাওয়ার নিয়ম
আপনারা জানেন মেথি রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। আবার এই মেথি কাঁচা খেতে হলে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। এখন নিচে আলোচনা করা হলো মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
প্রথম ধাপে আপনাকে এক গ্লাস পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি নিতে হবে।এরপরে এই পানিতে পর্যাপ্ত পরিমানে বা এক চা চামচ মেথি নিতে পারেন। এই মাঠি সারা রাতে ভিজিয়ে রাখুন। এই পানি সকালে খালি পেটে পান করুন।
মেথি ও পানির সাথে কিছু পানি উপাদান মিশিয়ে নিতে পারেন। যেমন মেথির সাথে লেবুর রস ও মধু মিশাতে পারেন। এরপরে এই পানি খেতে পারেন। উপকার পাবেন।
মেথি চাইলে আপনারা খালি পেতে চিবিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া দৈনন্দিন যেসব খাবার খান এই সব খাবে মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন ভাত ,মাছ ,ডাল ,রুটি ,গম ,তরকারি ইত্যাদির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
এছাড়া মেথি অন্য একটি উপায় খেতে পারেন। প্রথমে একটি বাটিতে কিছু পরিমানে পানি নিবেন এরপরে বাটিতে ১ চা চামচ বা ২ চা চামচ মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে মেথি সেঁকে শুধু পানি পান করতে পারবেন। এতে কিছু দিন পরে শরীরে ভালো ফলাফল পাবেন।
আপনারা চাইলে মেথি দিয়ে সাথে গোলাপ জল ব্যবহার করে স্পেশাল পেস্ট তৈরী করতে পারেন। এই পেস্ট ব্রণ, দাগ, চোখের নিচের কালো দাগ ও ত্বকের বলিরেখা এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন এতে করে ভালো ফলাফল পাবেন আসা করি।
মেথি মানব শরীরে যেসব উপকার করে থাকে
মেথি মানব শরীরে অনেক উপকার করে। অনেকে মেথির উপকার জানেন আবার মেথি সম্পর্কে জানেন না যে মেথি মানব শরীরে যেসব উপকার করে। হজমের উন্নতি ,প্রদাহ কমানো ,গ্যাস ও পেট ফাঁপা কমানো ,রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ এই সব উপকার করে থাকে মেথি। যাদের এই ধরণের সমস্যা আছে তারা নিয়ন্ত্রণের জন্য মেথি খেতে পারেন। নিচে মেথির গুরুত্বপূর্ণ উপকার সমূহ দাওয়া হলো আসা করি তত্থ গুলা আপনাদের উপকার হবে।
১. গ্যাস ও পেট ফাঁপা কমানো : অনেকের গ্যাস ও পেট ফাঁপা সমস্যা আছে তারা নিশ্চিন্তে মেথি খেতে পারেন। এটি অতিরিক্ত গ্যাস ও পেট ফাঁপা কমিয়ে দেয়। যাদের পেটে অসস্থি বোধ করেন তারা আরোগ্যর জন্য মেথি খেতে পারেন। নিচে গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া আছে আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে।
২. প্রদাহ কমানো : মেথির মধ্যে আছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য। মেথির এই বৈশিষ্টের কারণে পেটের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। যাদের পেটে প্রদাহ সমস্যা আছে তারা নিশ্চিন্তে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
৩. রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ : মেথির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ গুন্ এটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহাযতা করে। ফলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জন্য বড় ধরণের ভূমিকা রাখে।
৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ :অনেকে ডায়াবেটিস রোগে ভুগে থাকেন। যাদের ডায়াবেটিস বেড়ে যায় তারা মেথি খেতে পারেন। মেথি খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে খাওয়ার আগে নিয়ম অবশ্যয় জেনে নিবেন নতুবা মেথি খাওয়াতে কোনো উপকার হবে না।
৫. কৃমির সমস্যা দূর করে : অনেকে পেটে কৃমি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। পেটে কৃমি আক্রান্ত হলে শরীরে নানা রকম রোগে ভুগতে পারেন। তাই আপনারা পেট থেকে কৃমি দূর করতে মেথি খেতে পারেন এছাড়া ছোট শিশুদের ঔষুদের পরিবর্তে মেথর পানি খাওয়ানো যেতে পারে।
৬. ওজন কমাতে সাহায্য করে : অনেকে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। তাই তারা শরীরে ওজন কমাতে চেষ্টা করে থাকে। এজন্য তারা ঔষুধ এবং ডায়েট নেওয়ার চেষ্টা করে থাকেন। যাদের ওজন অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায় তারা মেথি খেতে পারেন। এতে শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে।
৭ . কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে : মেথিতে পর্যাপ্ত পরিমানে ফাইভার থাকার কারণে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৮ . কালো দাগ দূর করে : অনেকের শরীরে কালো দাগ থাকে। তারা চেষ্টা করে এই কালো দাগঃ দূর করার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজতে থাকে। তাই আপনারা চাইলে কালো দাগঃ দূর করার জন্য মেথি ব্যবহার করতে পারেন।
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
এতক্ষণ আপনার মেথি সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানলেন। মেথিতে বিদ্যমান উপাদান সমূহ ও এই সব উপাদানের কাজ সম্পর্কে জানলেন। মেথি মানুষের শরীরে যেসব উপকার করে সে সব সম্পর্কে জানলেন। বলতে গালে মেথির উপকার সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। আমাদের শরীরকে দীর্ঘ দিন সুস্থ রাখতে আমাদের উচিত প্রাকৃতিক উপাদান এর উপর নির্ভর করা। এইসব প্রাকৃতিক উপাদান মানুষের শরীরে ক্ষতি তো করে না বরং উপকার করে। তাই আমাদের গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খেতে হলে আগে মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। নিয়ম মেনে না খেলে উপকার তো হবে না বরং ক্ষতি হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম : গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খেতে হবে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি ভিজিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া এক চা চামচ মেথি একটা বাটিতে বা গ্লাসে পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেক কমে যাবে।
প্রথমে আপনারা গ্লাস ভর্তি পানি নিবেন এই পানিতে ১ চা চামচ মেথি নিবেন ১০ মিনিট পরে এই মেথি ভিজানো পানি খাবেন। এতে করে গ্যাস্ট্রিক কমার সম্বাবনা অনেকাংশে কমে যাবে।
আপনারা চাইলে এই পানির স্বাদ বাড়াতে পারেন। স্বাদ বাড়াতে হলে এই পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেতে পারে এতে করে এতে গ্যাস্ট্রিকের পরিমান সম্পূর্ণ নির্মূল হবে।
অনেকে আমাদের প্রশ্ন করেন মেথি কত দিন খেতে হবে ?
আপনারা চাইলে দিনে ২ বার করে ৬ মাস খেলে বিশেষ উপকার পাবেন।
অনেকের আস্ত মেথি খেতে সমস্যা হতে পারে তাই আস্ত মেথি না খেতে চাইলে ভাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।আয়ুর্বেদিক তৈরিতে মসলা বা শাক প্রয়োজন হয়। এই আয়ুর্বেদিক ঔষুধ তৈরিতে মেথি ব্যবহার করা হয়। যাদের শরীরে ডায়াবেটিকস আছে মেথি রক্তে কোলেট্রোলের মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ৩ মাস ধরে প্রতিদিন ২ বার ১ অথবা ২ কাপ চা চামচ মেথি গুঁড়া করে খেলে ভালো উপকার পাবেন। এভাবে প্রতিদিন ২ বার মেথি খেলে ডায়াবেটিকস রুগীরা ভালো উপকার পাবেন।
এছাড়াও যেভাবে মেথি খেতে পারেন
মেথি বীজ ভিজিয়ে খাওয়া : মেথি বীজ ভিজিয়ে খেতে পারেন। মেথি ভিজিয়ে খাওয়া সবচাইতে সহজ পদ্ধতি।
প্রথমে ১ অথবা ২ চা চামচ মেথি বীজ নিবেন
এর পরে বাটিতে অথবা গ্লাসে পানি নিন
রাতে ঘুমানোর আগে ভিজিয়ে রাখুন
সকালে খালি পেটে মেথি ভিজানো পানি খান
মেথিকে পাউডার করে খেতে পারেন : মেথিকে যদি পাউডার করে খান তবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য উপকারী হতে পারে।
এই পদ্দতিতে প্রথমে মেথিকে হালকা বাদামি করে আগুনে বাজতে হবে
মেথিকে ঠান্ডা করে গ্র্যান্ডিং মেশিন দিয়ে গুঁড়া করে নেন
প্রতিদিন সকালে গরম পানিতে মেথি গুঁড়া ১চা চামচ মিশিয়ে খেতে পারেন।
মেথির তেল ব্যবহার করতে পারেন : মেথির তেল বানিয়ে তরকারির সাথে মিক্স করে খেতে পারেন। এতেও গ্যাস্ট্রিকের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
একটি পাত্রে মেথির সাথে নারকোল তেল অথবা সরিষার তেল মিশাতে পারেন
এই অবস্থায় কিছুদিন অথবা ৭ দিন রেখে দিন
তেল ছেঁকে তরকারি সাথে বা আলুভর্তা করে খেতে পারেন।
মেথির চা : মেথিকে চা করেও খেতে পারেন। এতে গ্যাস্ট্রিকের উপকার পাবেন।
প্রথম ধাপে ১ চা চামচ মেথির বীজ নেন।
এক কাপ পরিমান পানিতে মেথির বীজ আগুনে ফুটান
এই ফুটানো পানি চা করে খেতে পারেন।
আমরা আপনাদের কাছ থেকে যেসব প্রশ্ন পাই
প্রশ্নের উত্তর
মেথির উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম কি?
উত্তর : মেথি খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ,কৃমির সমস্যা দূর করে,ওজন কমাতে সাহায্য করে,কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে,কালো দাগ দূর করে,গ্যাস ও পেট ফাঁপা কমানো ,প্রদাহ কমানো,রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখে।
মেথি কতটুকু খেতে হবে?
উত্তর : মেথি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে খেতে হবে। এক জন ব্যাক্তির সকালে ও রাতে ১ চা চামচ অথবা ২ চা চামচ খেতে পারেন।
কি খেলে পেটের আলসার ভালো হয়?
উত্তর : প্রতিদিন আপেল খেতে পারেন এতে আলসার ভালো হবে।
মেথি কি ওজন কমাতে সাহায্য করে?
উত্তর : জি মেথি ওজন কমাতে সাহায্য করে
মেথি কিভাবে খেলে গ্যাস কমে?
উত্তর : পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন ,চা করে খেতে পারেন ,পাউডার করে খেতে পারেন ,
মেথি ভিজিয়ে খেলে কি হয়?
উত্তর : গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়
প্রতিদিন কতটুকু মেথি বীজ খাওয়া উচিত?
উত্তর : সকালে ২ চা চামচ এবং রাতে ২ চা চামচ
মেথি কতদিন খেলে সুগার কমে?
৩ থেকে ৬ মাস খেতে পারেন
3 thoughts on “গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম।মেথির গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী”