কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে জানতে চাইলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়তে পারেন। কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ,রাতে কালোজিরা খেলে কি হয় সহ কালোজিরা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন ,বিস্তারিত নিয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেল। আশা করি আপনাদের কালোজিরা নিয়ে আর্টিকেল উপকারে আসবে।
কালোজিরা চিনেন না বা এখনো দেখেন নি এমন লোক খুব কম পাওয়া যাবে। কালোজিরা কোনো সাধারণ বীজ নয়। এইটা ঔষুধি গুন্ সম্পন্ন বীজ। কালোজিরা সম্পর্কে আমাদের অনেকের ধারণা মৃত্যু ব্যাতিত সকল রোগের মহাঔষুধ। আসলে এই বিষয়টা ১০০% সত্যি কালোজিরা মৃত্যু ব্যাতিত সকল রোগের মহাঔষুধ। প্রাচীনকাল থেকেই এই ভেষজ উপাদান মানুষ স্বাস্থ্যের উপকারিতার জন্য ব্যবহার করে আসছে। এই উপাদান ব্যবহার করার ফলে মানুষ বেশ উপকার পেয়ে থাকে। এই কালোজিরা আমরা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারি। কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ নানান রকম মারাত্মক রোগ থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে। কালোজিরা (নাইজেলা স্যাটিভা) একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন বীজ, যা বহু শতাব্দী ধরে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার কিছু উপকারিতা নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
১ ) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে : আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ ডায়াবেটিস এ ভুগে থাকেন। আপনারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা ব্যবহার করতে পারেন। কালোজিরায় আছে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক ,এই অ্যান্টি-ডায়াবেটিক রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে ফলে ডায়াবেটিস রুগীরা কালোজিরা ব্যবহার করে ভালো উপকার পায়। নিয়মিত যারা কালোজিরা গ্রহণ করেন তাদের রক্তে শর্করার পরিমান আস্তে আস্তে কমে যাবে। এছাড়া ডায়াবেটিস রুগীরা নিয়মিত কালোজিরা সেবনের ফলে শরীরে ইনসুলিন ব্যাবহারের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে করে ডায়াবেটিস রুগীরা যারা নিয়মিত ইনসুলিন গ্রহণ করেন তাদের আলাদা ভাবে ইনসুলিন নেওয়ার প্রয়োজন নাই।যারা ডায়াবেটিস সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য কালোজিরা গ্রহণ করা সব চাইতে ভালো টিপস।
২ ) গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে : গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে কালোজিরা খুব ভালো অবদান রাখে। বিভিন্ন কারণে পেটে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। আর এই গ্যাস্ট্রিকের মূল কারণ হতে পারে পেটে প্রদাহ জনিত কারণে। এইক্ষেত্রে কালোজিরা পেটে প্রদাহ জনিত সমস্যা কমাতে সাহায্য করে ফলে প্রদাহ জনিত সমস্যার কারণে তৈরী গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। অনেকে পেটে হজমক্রিয়ায় সমস্যায় ভুগে থাকেন এছাড়া পেট ফোলাভাব,অজীর্ণ সহ নানাবিধ সমস্যায় ভুগে থাকেন। আপনারা কালোজিরা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ কালোজিরা পেটে প্রদাহ জনিত সকল সমস্যা ,হজমক্রিয়া ,পেটের প্রদাহ জনিত সমস্যা এইরূপ নানাবিধ পেটের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কালোজিরার মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বিদ্যমান যা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে মানব দেহকে সুস্থ সাবলীল রাখে।
আরো পড়ুন : গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম।
৩ ) জন্ডিস বা লিভারের সমস্যা দূর করে : অনেক মানুষ আছেন যারা জন্ডিস বা লিভারের সমস্যায় ভুগে থাকেন। দিন দিন লিভারের রুগি যেন বাড়ছে। লিভার বা জন্ডিস রুগীরা কালোজিরা খেতে পারেন। কারণ কালোজিরা লিভার ও জন্ডিসের জন্য ভালো উপকারী। কালোজিরা লিভারে সকল প্রদাহ জনিত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে এবং এই সকল সমস্যা দিন দিন উন্নত করতে সাহায্য করে। কালোজিরায় প্রচুর পরিমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান যা লিভার ও জন্ডিসকে নানা রূপ ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারে। অপরদিকে কালোজিরা লিভারকে উন্নত করতে পারে এবং কার্যকরিতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এই সকল কারণে জন্ডিস বা লিভার আক্রান্ত রুগীরা জন্ডিস ও লিভারের সমস্যার কারণে কালোজিরা গ্রহণ করতে পারেন। আশা করি কালোজিরা গ্রহণ করলে লিভারের সমস্যায় ভালো উপকার পাবেন।
৪ ) ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা : আপনারা অনেকে ত্বকে নানাবিধ সমস্যায় ভুগে থাকেন। ত্বকে ভাঁজ পড়া এবং বলিরেখা ,খারাপ দাগ পড়া ,ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি সহ নানান রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এইসব ত্বকের সমস্যার কারণে কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন। কারণ কালোজিরাতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমান বেশি থাকায় শরীরে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে ভাঁজ পড়া এবং বলিরেখা ,খারাপ দাগ পড়া ,ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি এই সব সমস্যা থেকে সাহায্য করে। তাই আপনার নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে বা ভাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনারা অনেক উপকার পাবেন। এছাড়া কালোজিরা খেলে ত্বকের নতুন কোষ তৈরী হয় ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা আরো বৃদ্ধি পায় এবং ত্বককে আরো মসৃন করে তোলে ।
৫ ) স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা : হয়তো আপনারা মেমোরীলস বা স্মৃতিশক্তি দুর্বল সমস্যায় ভুগছেন। এই সমস্যা ব্যাক্তি জীবনে মারাত্মক ভাবে পীড়া দেয়। ঔষুধ ব্যাতিত এই সমস্যা সমাধান করতে চাইলে কালোজিরা খেতে পারেন। কারণ কালোজিরা মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও মনস্থির করতে কালোজিরার ভূমিকা অসাধারণ। বিভিন্ন কারণে স্মৃতিশক্তি সমস্যা হতে পারে। যেমন রাত জেগে থাকা ,সকালে দেরিতে ঘুম থেকে উঠা ,এছাড়া শরীরে নানান রকম অসুখ এর কারণে বেশি পাওয়ার এর ঔষুধ খেলে এবং বিভিন্ন প্রদাহ জনিত কারণে স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা এবং উদ্বেগ জনিত কারণে আমাদের স্মৃতিশক্তিকে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানেন হয়তো। নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খেলে শরীরে প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে ফলে মস্তিষ্কের ধীরে ধীরে উন্নতি হয়। মস্তিষ্কের উন্নতির জন্য কালোজিরা নিয়মিত খেতে পারেন। যারা খিট খিটে মেজাজে ভুগে থাকেন তাদের মেজাজকে উন্নত করতে সাহায্য করে যারা স্মৃতিশক্তি দুর্বল তাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা দূর করে স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেয় পাশাপাশি মেধাকে আরো বাড়াতে সাহায্য করে এই কালোজিরা। প্রতিদিন কালোজিরার চা করে খেতে পারেন এতে ভালো উপকার পাবেন।
আরো পড়ুন : দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায়
৫ ) কিডনির সমস্যা দূর করতে কালোজিরা : বর্তমানে দিনে দিনে কিডনি রুগি অত্যধিক হারে বেড়ে গেছে। একজন মানুষের ২ টা কিডনি নষ্ট বা বিকল হলে তার বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব। তাই কিডনি সুস্থ রাখতে হলে নিমিত্ত পর্যাপ্ত পরিমানে পানি সাথে কালোজিরা খেতে পারেন। নিয়মিত কালোজিরা খেলে কিডনিতে পাথর থাকলে তা গলে যায় এছাড়া কিডনিতে নানাবিধ প্রদাহ বা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে কালোজিরার ভূমিকা অনেক বেশি। আর যদি পারেন কালোজিরার সাথে একটু খাঁটি মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এতে বিশেষ উপকার পাবেন। কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। কিডনি ভালো রাখতে কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন যা কিডনির জন্য বেশ উপকারী।
৬) পিরিয়ড জনিত সমস্যা দূর করতে : অনেক মা বোন ,বা আপু পিরিয়ড জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন। অনিয়মিত পিরিয়ড বর্তমানে মেয়েদের একটি কঠিন সমস্যা। আপনারা হয়তো জানেন না কি কারণে এই সমস্যা হয়। নিয়মিত রক্ত চলাচল না করলে এই সমস্যা হয়। আর কালোজিরা শরীরে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে। তাই মা ,বোন ,আপুরা নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারো এতে অনিয়মিত পিরিয়ড জনিত সমস্যা এবং পিরিয়ডের সকল সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৭) চুল পড়া রোধে কালোজিরা : এখন অনেকের অল্প বয়সে চুল পরে যায়। চুল কিছু কারণে পড়তে পারে ,প্রথমত বয়স্ক জনিত কারণে পড়তে পারে দ্বিতীয়ত চুল পড়া রোগের কারণে পড়তে পারে। নিয়মিত কালোজিরা যারা খান তাদের চুল পড়া সমস্যা দূর হতে পারে কারণ কালোজিরাতে বেশ কয়েকটি উপাদান আছে তারমধ্যে প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এবং খনিজ পদার্থ আছে যা আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে। এই ৩ টি উপাদান চুলের গোড়া শক্ত করে এবং চুলকে মজবুত করতে সাহায্য করে। ফলে চুল পড়া বন্ধ হয়। আপনারা চাইলে কালোজিরা দিয়া তেল বানাতে পারেন। এই তেল মাথায় ব্যাবহার করলে মাথার চুল পড়া বন্ধ হয়। এছাড়া চুলের গোড়া শক্ত হয়। কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন যা চুলের জন্য বেশ উপকারী।
৮ ) শিশুর দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে কালোজিরা : বিশেষ করে শিশু জন্মের পর থেকে মায়েরা শিশুর দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত থাকেন। নিয়মিত শিশু যত্নের ফলে শিশুর দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পায়। কিভাবে মায়েরা শিশুর যত্ন নিবেন ,কি কি খাবার তাদের খাওয়াবেন এই সব বিষয় হয়তো অনেকে জানেন না। শিশুকে নিয়মিত বা মাঝে মাঝে কালোজিরা খাওয়াতে পারেন। কালোজিরাতে মোট ৩ টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বিদ্যমান থাকে।
প্রোটিন ,লোহা ও ক্যালসিয়াম এর মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বিদ্যমান থাকায় শিশুর দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শিশুদের খাওয়ানোর আগে অবশ্যয় এক জন অভিজ্ঞ ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে খাবেন। মনে রাখবেন ২ বছরের কম বয়সী শিশুকে কালোজিরা খাওয়াবেন না কারণ এই সময় পরিপাকতন্ত্র সঠিকভাবেন শক্তিশালী হয় না। এই সময় খাওয়ালে শিশুর ক্ষতি হতে পারে। ২ থেকে ৫ বছরের বেশি শিশুকে অল্প অল্প করে খাওয়াতে পারেন। এতে শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে সাথে মেধা বাড়বে।
৯ ) নানাবিধ রোগের উপশমে কালোজিরা : অনেকের শরীরে নানাবিধ রোগ জমে থাকলে বুজতে পারেন না। আবার অনেকে ডক্টরের কাছে যেয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বুজতে পারেন যে শরীরে রোগ হয়েছে। নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায় ফলে সহজে শরীরে রোগ স্পর্শ করতে পারে না। পেটের নানা রকমের রোগ ,ত্বকের সমস্যা ,গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ,আলসারজনিত সমস্যা ,গলা ও দাঁতে ব্যাথা ,একজিমা , লিভারের সমস্যা ,শরীরে ব্যাথা ইত্যাদি রোগ থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন। যারা কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন তারা নিয়মিত কালোজিরা খান যার ফলে এই সমস্ত রোগ বালাই থেকে সুস্থ থাকতে পারেন।আগে থেকে কালোজিরা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করলে পরে আর রোগ বালাইয়ে ভুগতে হবে না।
১০ ) যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা : বর্তমান সময় অনেকে যৌন সমস্যায় ভুগে থাকেন তার কারণ খাদ্যে ভেজাল ,অথবা শরীরে কোনো প্রদাহ জনিত সমস্যা অথবা সুষম বা ভিটামিনযুক্ত খাবার না খাওয়ার কারণে হতে পারে। আপনারা হয়তো জানেন না কি কারণে বা কোন হরমোন শরীর থেকে কমে গেলে যৌন সমস্যা দেখা দেয়। মূলত টেষ্টহরমোন নামক এক ধরণের হরমোন আছে যা শরীরে কমে গেলে যৌন সমস্যা দেখা দেয়। যৌন সমস্যা দেখা দিলে কৃত্তিম ঔষুধ না খেয়ে নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারেন। কালোজিরা নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীরে টেষ্টষ্টোরণের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে যৌন সমস্যা থাকলে তা দূর হয়। তাই দাম্পত্য জীবন সুখের রাখতে হলে নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারেন। এতে দাম্পত্য জীবন সুখের ও স্বাচ্ছন্দময় হবে।
১১ ) শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগ নিরাময়ে কালোজিরা : হাঁপানি একটি মারাত্মক রোগ যার এক বার হাঁপানি হয়েছে সে বুজতে পারে হাঁপানি কতটা কষ্টকর রোগ। মূলত ফুসফুসে প্রদাহ থাকলে এই হাঁপানি হয়। যখন ফুসফুসে হাঁপানি হয় তখন শ্বাসনালীর পেশীগুলো সংকুচিত হয় ফলে শ্বাসকষ্ট হয়। যদি শ্বাসকষ্ট সমস্যা থেকে বাঁচতে চান তবে নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারেন। কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো আপনাদের জানা আছে।
নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খেলে ফুসফুসের প্রদাহ কমে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ফলে শ্বাসকষ্টের বিভিন্ন উপসর্গগুলি উন্নত করে।ফুসফুসে প্রদাহ জনিত সমস্যা ও ফুসফুসে নানাবিধ ব্যাকটেরিয়া জনিত কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে কালোজিরা ভেজে বা চিবিয়ে খেতে পারেন। এতে শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগ নিরাময় হবে। কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ,প্রদাহ কমিয়ে শরীরকে সুস্থ করে তোলে ,ফুসফুসে বা শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ কমিয়ে শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি থাকলে তা কমিয়ে দেয়। মোট কথা শরীরকে সুস্থ রাখতে কালোজিরার ভূমিকা অপরিসীম।
১২ ) মায়ের বুকের দুধ বাড়াতে কালোজিরার উপকার : কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। বিশেষ করে যারা মা হয়েছেন বা নতুন করে মা হবেন তাদের বুকে দুধ না আসলে কালোজিরা খেতে পারেন। প্রথম বার যারা মা হয়েছেন কিন্তু বুকে দুধ হচ্ছে না তারা বুকে দুধ হওয়ার জন্য খাবারের তালিকা খুজচ্ছেন তাদের জন্য কালোজিরা বুকের দুধ তৈরিতে বিশেষ উপকার দিবে। ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহার হচ্ছে কালোজিরা। যদি মায়ের বুকের দুধ বাড়াতে বাধা দেয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো উপাদান তবে সেগুলা ধ্বংস করে দেয় এই কালোজিরা।
১৩ ) শরীরে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে কালোজিরা : জেনে রাখা ভালো LDL নামক কোলেস্টেরল শরীরের জন্য ক্ষতিকর অপরদিকে HDL নামক কোলেস্টরল শরীরের জন্য ভালো। কালোজিরা চিবিয়ে খেলে এই LDL নামক কোলেস্টরল এর মাত্রা কমে যায় অপরদিকে HDL নামক কোলেস্টরল বেড়ে যায়। যা শরীরের উপকার কমিয়ে ক্ষতি বাড়িয়ে তোলে। যাদের উচ্চ কোলেস্টরল আছে তাদের শরীরে প্রদাহ বেড়ে যায়। নিয়মিত কালোজিরা খেলে কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় ফলে শরীর থেকে প্রদাহ কমে যায়। রক্তে এমন এক ধরণের চর্বি আছে যা বেড়ে গেলে রক্তে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই চর্বির নাম ‘ট্রাইগ্লিসারাইড’ . তাই হৃদরোগ থেকে বাঁচতে নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারেন কারণ কালোজিরা ‘ট্রাইগ্লিসারাইড’ এর পরিমান কমিয়ে দেয়।
১৪ ) পিঠের ও পেশির ব্যাথা দূর করতে কালোজিরা : পিঠে আঘাত জনিত কারণে অথবা প্রদাহ জনিত কারণে যদি পিঠে অল্প সময় অথবা দীর্ঘ সময় পিঠে ও পেশিতে ব্যাথা থাকে তবে ঔষুধ না খেয়ে নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন। কারণ নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরে আঘাত জনিত সমস্যা বা প্রদাহ জনিত সমস্যা কমে যায়। শরীরে অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ব্যাথা হলে নিয়ম করে কালোজিরা খেতে পারেন এতে ভালো উপকার পাবেন।
১৫ ) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা : আপনারা যারা উচ্চ রক্তচাপ বা নিম্ন রক্তচাপে ভুগে থাকেন তারা নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন। কালোজিরা নিয়মিত খেলে উচ্চরক্তচাপ ও নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
১৬ ) হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা : অনেক সময় বেশি খাবার খেলে বা বাঁশি অথবা পচা খাবার খাওয়ার কারণে বদহজম হতে পারে। অথবা প্রদাহ জনিত কারণে বদহজম হতে পারে। এরূপ সমস্যার কারণে নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারেন। কালোজিরা খেলে হজম শক্তি আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়। এক কথায় হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা বেশ উপকারী।
এতক্ষন কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করলাম। কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আপনারা কালোজিরা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানতে পারলেন। অসুস্থ ব্যাক্তি নিয়মিত কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন এতে ভালো উপকার পাবেন। ঔষুধ এর বিকল্প হিসাবে কালোজিরা ব্যাবহার করতে পারেন এতে রোগ নিরাময় হবে। ঔষুধ এ পার্শপ্রতিক্রিয়া আছে কিন্তু কালোজিরে কোনো প্রকার পার্শপ্রতিক্রিয়া নাই। তবে মনে রাখবেন শিশুদের যারা ২ বছরের কম বয়স তাদের কালোজিরা না খাওয়ানো ভালো।
আর যারা ২ বছরের বেশি বয়স তাদের কালোজিরা খাওয়াতে হলে অবশ্যয় ডক্টর এর পরামর্শ নিয়ে খাওয়াবেন। অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থ অবস্থায় কালোজিরা খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। ফলে আর অসুস্থ হবেন না। কালোজিরা খাওয়া অভ্যাসে পরিণত করতে পারেন এতে ভালো উপকার পাবেন। আমাদের আজকের আর্টিকেল কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। কালোজিরা সম্পর্কে যদি আরো কিছু জানতে চান তবে আমাদের জানাবেন।
1 thought on “কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা।কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য”